২১শে ফেব্রুয়ারি কি দিবস? ইতিহাস, শহীদদের নাম!
এই আর্টিকেলে ২১ শে ফেব্রুয়ারি কি দিবস, ২১ শে ফেব্রুয়ারি ইতিহাস, ২১ শে ফেব্রুয়ারি কি বার ছিল, ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদদের নাম ইত্যাদি বিষয়ে জানতে পারবেন।
প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বেব্যাপী ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে দিবস হিসবে পালন করা হয়। এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য এক শোকের দিন। এই দিনেই ১৯৫২ সালের এই দিনেই ভাষা আন্দোলন সংঘিটিত হয়েছিল যেখানে সালাম, রফিকসহ আরও অনেকে শহীদ হন।
চলুন ২১শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে সঙ্গক্ষিপ্ত ইতিহাস ও বিস্তারিত কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর জানি।
২১ শে ফেব্রুয়ারি কি দিবস?
২১ শে ফেব্রুয়ারি হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশে ২১শে ফেব্রুয়ারীকে মাতৃভাষা দিবস হিসবে প্রস্তাব করা হয়।
সেই অধিবেষনের অনশগ্রহন করা ১৮৮ টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়।
২০০০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশ সমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস
বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালির আত্ম-অম্বেষায় যে ভাষাচেতনার উন্মেষ ঘটে, তারই সূত্র ধরে বিভাগোত্তর পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটায়।
ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্রযুবা হতাহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হয়।
নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে। তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করে।
ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি।
১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন বিল’ পাশ হয়। যা কার্যকর হয় ৮ মার্চ ১৯৮৭ সাল থেকে। সূত্র – উইকিপিডিয়া।
২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদদের নাম
- রফিকউদ্দিন আহমদ
- আবুল বরকত
- আবদুল জব্বার
- আবদুস সালাম
২২শে ফেব্রুয়ারি শহীদদের নাম
- শফিকুর রহমান
- আব্দুল আউয়াল
- অহিউল্লাহ
- ও অজ্ঞাত এক বালক
ভাষা শহীদের নামের তালিকা
রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাষা শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন পাচঁজন। তারা হলেনঃ
- আবুল বরকত
- আবদুল জব্বার
- রফিকউদ্দিন আহমদ
- আবদুস সালাম
- শফিউর রহমান
১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা কত তারিখ ছিল?
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির দিনে বাংলা তারিখ ছিল ৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি কি বার ছিল?
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার।
২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কোন সংস্থা
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক বাঙালির অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হলে আমাদের সেই চেতনাই বিশ্বে প্রসারিত হয়। জাতিসংঘের ঘোষণায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, এ দিবস ‘১৯৫২ সালের একুশে ফ্রেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য বাংলাদেশের মানুষের অভূতপূর্ব আত্মত্যাগের স্বীকৃতি‘।
কত সাল থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারি ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশে ২১শে ফেব্রুয়ারীকে মাতৃভাষা দিবস হিসবে প্রস্তাব করা হয়।
সেই অধিবেষনের অনশগ্রহন করা ১৮৮ টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়।
২০০০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশ সমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।
শেষ কথাঃ এই আর্টিকেলে ২১শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কমন কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। আপনারা যদি একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে বিস্তারিত ইতিহাস জানতে চান, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।