আমাদের আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব যে মোবাইলের মাধ্যমে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন বা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার নিয়ম।
তাহলে চলুন মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য জেনে নেয়া যাক।
বর্তমান বিশ্বে ছোট থেকে বড় সকলের কাছেই এখন মোবাইল ফোন রয়েছে আর এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কিন্তু অনেকেই চান যে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো শেখার জন্য। কিন্তু কিভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলো মোবাইল থেকে শিখতে হয় সেই বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা না থাকার কারণে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন না।
এরপরে Freelancing এর কোণ কাজগুলো মোবাইল থেকে করতে পারবেন সেটাও বলবো। তাই আপনাদেরকে আজকে শেখাবো মোবাইলের মাধ্যমে কিভাবে ফিন্যান্সিং করবেন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব ?
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো নিচে দেয়া হল :
- ০১/ প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপস
প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপ গুলোর মধ্যে যেমন মনে করুনঃ মাইক্রোসফট অফিস, microsoft এক্সেল তারপরে মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট এই সকল টুলস গুলোর ব্যবহার যদি আপনি ভালোভাবে শিখতে পারেন! তাহলে এই টুলস গুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করা যায় সেই কাজগুলো আপনি অনলাইনের মাধ্যমে অন্য মানুষদেরকে করে দেওয়ার মাধ্যমেও কিন্তু ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। Data entry এর বিভিন্ন কাজ করে দিতে পারবেন।
- ০২/ কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং জগতের সবথেকে জনপ্রিয় একটি কাজ হলো কন্টেন্ট রাইটিং। আপনি যদি লেখালেখির উপরে দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন। আর আপনি এই কাজটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই করতে পারবেন আপনার কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ এর দরকার হবে না, তবে আপনার কাছে ল্যাপটপ কম্পিউটার থাকলে সেটার মাধ্যমেও করতে পারবেন কোন সমস্যা নেই।
মোবাইলের মাধ্যমে আর্টিকেল লেখার জন্য আপনাদের একটা নোটপ্যাড দরকার হবে, আর মোবাইলের কিবোর্ড থাকলেই হবে। তাহলেই আপনি টাইপিং করে যে বিষয় নিয়ে লিখতে চান সে বিষয়ে লিখবেন, তারপরে যার কাছে আপনি লেখাগুলো দিবেন তাকে পাঠিয়ে দিবেন তাহলেই হবে।
আপনি মোবাইল দিয়ে আর্টিকেল লেখার জন্য কয়েকটা অ্যাপস ইনস্টল করতে পারেন সেগুলো নিচে দেয়া হল:
এই সমস্ত অ্যাপসগুলো আপনার মোবাইল ফোনে ইন্সটল করে তারপরে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন।
আপনি বাংলাদেশী লোকাল কেল্যান্ড দের কাজও করে দিতে পারেন অথবা আপনি চাইলে বিদেশী যে সকল মানুষেরা রয়েছে তাদের সাথে কাজ করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে একাউন্ট করে তারপরে কাজ করা লাগবে।
আর আপনি যদি লোকাল ভাবে বাংলাদেশী ক্লায়েন্টদের কাজ করতে চান তাহলে আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে দেখবেন যেখানে কনটেন্ট রাইটারদেরকে খুঁজে থাকে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মালিকেরা আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করে তারপরে তাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখা শুরু করতে পারেন। আশা করি যে, আপনি এই বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারছেন।
- ০৩/ সোশ্যাল মিডিয়ার ম্যানেজার হতে পারেন
আপনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কাজ করা শুরু করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর কাজ হচ্ছে মূলত আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির এবং বিভিন্ন মানুষের যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলো রয়েছে সেই একাউন্টগুলো পরিচালনা করতে হবে। অর্থাৎ সে সকল অ্যাকাউন্ট গুলোর মধ্যে যখন কেউ মেসেজ করবে তার রিপ্লাই দিতে হবে বা তাকে যদি কোন আপডেট জানানো লাগে, তাহলে সেগুলো আপনাকে জানিয়ে দিতে হবে ।
এক কথায় বললে আপনি যে, কোম্পানির হয়ে কাজ করবেন তাদের কোম্পানির কোন সার্ভিস বা প্রোডাক্ট সম্পর্কে যদি কোন আপডেট কাস্টমারদেরকে জানাতে হয় তাহলে আপনাকে সেটা করে দিতে হবে এবং তারা যদি কোন প্রশ্ন করে সে সকল প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দেওয়া লাগবে। এই কাজগুলো কিন্তু একদম সহজে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে কিন্তু এই কাজগুলো করে বেশ ভালো পরিমানে হতে উপার্জন করতে পারবেন।
- ০৪/ গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ করতে পারেন
আপনি যদি মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে কাজ করতে চান তাহলে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করতে পারেন। আপনি হয়তোবা শুনে থাকবেন যে একজন গ্রাফিক ডিজাইনের আয় মাসে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তবে গ্রাফিক ডিজাইন এর যে এডভান্স কাজগুলো রয়েছে সেগুলো আপনি মোবাইলের মাধ্যমে করতে পারবেন না ঠিকই কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড যে সকল ছোট ছোট কাজগুলো রয়েছে যেমন মনে করুন, লোগো ডিজাইন করা তারপরে বিভিন্ন ব্যানার ডিজাইন করা পোস্টার ডিজাইন করা ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করা বইয়ের কভার ডিজাইন করা।
এছাড়াও যে সকল ডিজাইনের কাজগুলো রয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে করা যায় সেগুলো আপনি করতে পারবেন। মোবাইলের মাধ্যমে এই সকল ডিজাইন করার জন্য কিছু অ্যাপস বা ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি এই সমস্ত কাজগুলো করতে পারবেন তা নিচে দেওয়া হল:
এইগুলোর বাহিরে ও আপনি অনেক পেয়ে যাবেন যেগুলোর মাধ্যমে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন এর যে সকল ডিজাইনের কাজগুলো রয়েছে সেগুলো করতে পারবেন।
- ০৫/ এসইও এর কাজ করতে পারেন
ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে সবথেকে জনপ্রিয় একটি কাজ হল এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এসইও করার মাধ্যমে একটা ওয়েবসাইট থেকে গুগলের প্রথম পেইজের র্যাংক করানো সম্ভব। এসইও করার জন্য ওয়েবসাইটের মালিকেরা প্রচুর পরিমাণে টাকা খরচ করে থাকে।
কারণ যখন একটা ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পেইজে রেঙ্ক করতে পারবে তখন তার ওয়েবসাইটের মধ্যে ভিজিটর আসবে, আর সেজন্য সবাই গুগলের প্রথম পেজে র্যাংক করানোর জন্য এসইও এর কাজগুলো করে থাকে।
মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব?
কোর্স করতে পারেন: আপনি মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোর্স করতে পারেন। অনলাইনে সার্চ করলে অসংখ্য কোর্স পেয়ে যাবেন যেগুলো একদম বিনামূল্যে করা যায়, এছাড়াও আপনি যদি টাকা দিয়ে কোর্স করতে চান তাহলে সেটাও করতে পারবেন। এরপরে অফলাইনে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান পাবেন যেখানে এই সকল কোর্সগুলো করানো হয়ে থাকে, ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড আপনি সেখান থেকেও শিখতে পারেন।
ইউটিউব থেকে শিখতে পারেন: youtube এর মধ্যে অসংখ্য ভিডিও রয়েছে আপনি যে কাজটি শিখতে চান না কেন সেই কাজের ভিডিও কিন্তু আপনি ইউটিউবের মধ্যে পেয়ে যাবেন শুধু আপনি ঠিকভাবে সার্চ করতে জানলেই হবে।
আপনি যে কাজটা শিখবেন সেই কাজের বিস্তারিত লিখে ইউটিউবে সার্চ করবেন। তাহলে অসংখ্য ভিডিও পেয়ে যাবেন সেই ভিডিও গুলো দেখে আপনি কাজটা অনেকটাই তো করে নিতে পারবেন, এরপরে আপনি যখন কাজ করতে থাকবেন,তখন আস্তে আস্তে সবকিছুই আপনি বুঝতে পারবেন এবং একসময় আপনি সেই কাজে দক্ষ হয়ে যাবেন।
পিডিএফ বই পড়তে পারেন: গুগলে সার্চ করলে আপনি অনেক পিডিএফ বই পাবেন। আপনি যে বিষয়টা শিখতে চান সে বিষয়ে রিলেটেড পিডিএফ বইগুলো পড়েও আপনি একটা ধারণা নিতে পারবেন।
ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়তে পারেন: আপনি যে কাজটা শিখতে চান সেই কাজ রিলেটেড বিভিন্ন ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়তে পারেন। আপনি যে কাজ শিখবেন সেই কাজে আগে যারা দক্ষ অর্থাৎ, সে রিলেটেড কাজ যারা করছে তাদের ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে আপনি প্রতিদিন ভিজিট করতে পারেন, তাহলে তারা যে আপডেটগুলো জেনে নিতে পারবেন এবং সেগুলো দেখলে কিন্তু আপনি যে কাজটা শিখতে চাচ্ছেন সেটা শিখতে পারবেন।
মনে করুন, আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ শিখবেন তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড যে সকল ওয়েবসাইটগুলো রয়েছে সেগুলোতে প্রতিদিন ভিজিট করতে পারেন। তাহলে সেখানে যেসকল ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড তথ্যগুলো পাবলিশ করা হবে সেগুলো আপনি জেনে নিতে পারবেন এবং এর ফলে আপনার কিন্তু কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে।
আমাদের শেষ কথা
তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন বা মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারলেন।