মোটা হওয়ার উপায় – সহজ ১০টি পদ্ধতি
মোটা হওয়ার যে সহজ উপায়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, এগুলো টানা কয়েক মাস মেনে চলুন, দেখবেন আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। সর্বোপরি, স্বাস্থ আল্লাহর দান, তাই অবশ্যই আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতে হবে।
মোটা হলে নিজের কাছে যেমন অস্বস্তি লাগে তেমন চিকন হলে বেমানান লাগে। এমন অনেক মানুষ আছে যারা মোটা হতে চায় কিন্তু অনেক কিছু করার পরও মোটা হয় না।
বয়স আর উচ্চতার তুলনায় ওজন কম হওয়া বা আন্ডারওয়েট হওয়া কিন্তু সমস্যার ব্যাপার। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন মোটা হওয়ার ১০টি সহজ উপায়।
কোনো সমস্যার সমাধান জানার আগে ওই সমস্যার কারণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। মোটা হওয়ার সহজ উপায়গুলো জানার আগে চলুন জেনে নেই ওজন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে।
ওজন কম হওয়ার কারণ
বিভিন্ন কারনে ওজন কম হতে পারে যেমন, অনিয়মিয় খাদ্যভ্যাস, জেনেটীক কারন, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, ডায়রিয়া, ক্যান্সার, ডায়বেটিস, এইডস, হাইপারথাইরয়েডিজম, আথ্রাইটিস, যক্ষ্মা, কিডনির সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, ড্রাগ নেওয়া ইত্যাদি।
তাছাড়া বয়সের কারনেও ওজন কম বেশি হয়ে থাকে। ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম এইদিকগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় ১০ টি উপায়
সমস্যা থাকলে তার সমাধান আছে। চলুন জেনে নেই মোটা হওয়ার সহজ কিছু উপায়।
১.ব্যায়াম করা
অনেকেই ভেবে থাকেন ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করা প্রয়োজন, কিন্তু এই ধারণা ভুল। ওজন কমাতে যেমন ব্যায়াম প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন বাড়াতে ও ব্যায়াম প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে শুধু দৌড় ঝাপই যথেষ্ট না। প্রতিদিন নিয়ম করে জিম করতে হবে। জিমে অভিজ্ঞ ট্রেইনার থাকেন তিনিই বলে দিবেন কোন ব্যায়াম আপনাকে করতে হবে।
২. বার বার খাবার গ্রহণ
বার বার খাবার খাওয়া প্রতিটি মানুষের উচিৎ। দুই ঘন্টা পর পর অল্প করে কিছু খেতে হবে। কিন্তু যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের দুই ঘন্টা পর পর বেশি করে খেতে হবে।
এসময় আপনি দুধ, দই, ফল, ছানা দিয়ে পূরণ করতে পারেন। এসব খেলে আপনার শরীরে পুষ্টির পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি করবে।
৩. খাবারে রাখুন কার্বোহাইড্রেড
কার্বোহাইড্রেড ওজন বাড়াতে খুব সাহায্য করে। খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেড অবশ্যই রাখতে হবে। ভাত ও রুটি কার্বোহাইড্রেডের প্রধান উৎস।
প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার কার্বোহাইড্রেড খাবার খাবেন। ভাত ও রুটি বেশি কার্বোহাইড্রেড থাকার কারনে কিন্তু বেশি করে ভাত আর রুটি খাবেন না।
আপনাকে অতিরিক্ত ফ্যাটের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেড খাবেন কিন্তু সাধারণের তুলনায় কিছুটা বেশি। এটি মোটা হওয়ার সহজ উপায়গুলোর মাঝে অন্যতম।
৪. বেশি ক্যালোরি গ্রহণ
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আমরা বেশি ক্যালোরি বার্ন করি এবং কম ক্যালোরি গ্রহণ করি। কিন্তু এই ক্ষেত্রে উল্টা হবে যতোটুকু ক্যালোরি বার্ন করবেন তার দ্বিগুণ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে।
ওজন বৃদ্ধির জন্য শরীরের চাহিদা তুলনায় বেশি ক্যালোরি নিন। ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করাতে দিনে ৬০০-৭০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে।
আর যদি ওজন আস্তে আস্তে বাড়াতে চান তাহলে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহন করতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহ করলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
৫. সঠিক প্রোটিন গ্রহণ
ওজন বৃদ্ধি করতে শুধু ক্যালোরিই যথেষ্ট না। ক্যালোরির পাশাপাশি সঠিক প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। সঠিক প্রোটিন গ্রহণ না করলে ক্যালোরি বাড়তি ফ্যাটের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে। যেমন দুধ, ডিম, ডাল অবশ্যই রাখতে হবে।
৬. ড্রাই ফ্রূটস খাবেন
ড্রাই ফ্রূটসে আছে অনেক ক্যালোরি ও ফ্যাট যা ও ওজন বাড়াতে অনেক কাজে দিবে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে দুইটি কাজু বাদাম ও দুইটি কিসমিস খাবেন।
এইটা কোনোভাবে ভুলবেন না। সকালের নাস্তায় রাখুন আমন্ড বা পেস্তা। ওজন বাড়াতে আপনার ডায়েট চার্টে বাদামের পরিমান বেশি রাখতে হবে।
এভাবে নিয়ম মেনে ড্রাই ফ্রূটস খেলে একমাসের মাধ্যে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
৭. টেনশন্মুক্ত থাকুন
সব সমস্যার বড় কারণ হচ্ছে টেনশন। ওজন কমাতে যেমন টেনশন মুক্ত থাকতে হবে। ওজন বৃদ্ধিতেও টেনশনমুক্ত থাকা খুব প্রয়োজন।
আজকাল টেনশনমুক্ত থাকা খুব কঠিন কিন্তু আপনাকে চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব টেনশনমুক্ত থাকার।
৮. পরিমিত ঘুমান
শরীর ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ৮ ঘন্টার কম ঘুমানো যাবে না। তাছাড়া প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে নিয়ম করে ইয়োগা বা যোগাসন করতে হবে তাতে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
৯. ঘুমানোর আগে দুধ মধু খান
ঘুমানোর আগে এমন কিছু খেতে হবে যা পুষ্টিকর ও ক্যালোরিযুক্ত। কারণ সেটা ঘুমিয়ে থাকবেন বলে খরচ হবে না।
পুরো রাত আপনার শরীরে ক্যালোরির কাজ করবে এবং ওজন বৃদ্ধি করবে। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে দুধ ও মধু মিশিয়ে খান।
১০. ডায়েট চকলেট এবং চিজ রাখুন
সচরাচর বাহিরের খাবার খেতে আমরা নিষেধ করে থাকি। কিন্তু ওজন বাড়াতে বাহিরের খাবার খেতে হবে যেমন, আইসক্রিম, পেষ্ট্রি, বার্গার খাবার খুব কার্যকরী।
এই খাবারগুলোতে ফ্যাট থাকে। তবে বেশি খেলে শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। আপনি চাইলে এসব খাবার খেতে পারেন কিন্তু পরিমাণ মতো। প্রতিদিন খাবারে ডায়েট চকলেট ও চিজ রাখতে পারেন।
সহজে মোটা হওয়ার উপায় নিয়ে শেষ কথাঃ
উপরে মোটা হওয়ার যে সহজ উপায়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, এগুলো টানা কয়েক মাস মেনে চলুন, দেখবেন আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। সর্বোপরি, স্বাস্থ আল্লাহর দান, তাই অবশ্যই আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতে হবে।
আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ওজন বাড়াতে সহয়তা করবে। আজকের আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।