ইসলামিক পোস্টসমসাময়িক তথ্য

শবে বরাত কবে? কত তারিখে ২০২৪? Shabe Barat 2024

শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে? শবে বরাত কি? পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস জেনে নিন।

শবে বরাত কবে ও কত তারিখে ২০২৪ – ইউটিউব ভিডিও

শবে বরাত ইসলামী ক্যালেন্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত যা শাবান মাসের ১৪ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে উদযাপিত করা হয়। শাবান মাসের একটি মর্যাদাপূর্ণ রাতের নাম শবে বরাত।

হাদিসের ভাষায় ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ তথা ১৫ শাবানের রাত। ‘শবে বরাত’ ফারসি শব্দ। ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত, ‘বরাত’ অর্থ নাজাত বা মুক্তি। এই দুই শব্দ মিলে অর্থ হয় মুক্তির রজনী।

শবে বরাত কবে? কত তারিখে ২০২৪? Shabe Barat 2024

২০২৪ শবে বরাত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৫ তারিখ রাতে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু সঠিক তারিখটি শাবান ১৪৪৪ সালের চাঁদ দেখার সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে।

এখানে উল্লেখ করা তারিখটি শুধুমাত্র আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু শবে বরাত চাঁদ দেখার পর ঘোষিত হয়, তাই চাঁদ দেখার পরেই সঠিক তারিখটি জানা যাবে।

শবে বরাত কি?

শবে বরাত ইসলামী ক্যালেন্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত যা শাবান মাসের ১৪ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে উদযাপিত করা হয়। তাই একে নিসাফ শাবান বলা হয়। এই বরকতময় শাবান মাসের ১৪ তারিখ সূর্যাস্তের সময় শুরু হয় এবং ১৫ তারিখ ভোর বেলায় শেষ হয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রতিটি দেশের এর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমনঃ আরবি ভাষায় লাইলাতুল বরাত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় নিসুফ সায়াবান (মালাম নিসুফ সায়াবান) তুরস্কে বেরাত জান্দিলি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষ করে উপমহাদেশে শবে বরাত নামে পরিচিত। এই শবে বরাত রাত কে মুসলমানরা ক্ষমার রাত বলে মনে করে এবং সারা রাত দোয়া, প্রার্থনা, ক্ষমা চেয়ে পালন করে।

শাবান মাস কি?

হিজরি বর্ষপঞ্জির অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ মাস শাবান। এই পবিত্র মাসটির নামকরণের প্রতি লক্ষ করলেই এর গুরুত্বের বিষয়টি সহজেই অনুধাবন করা যায়। শাবান শব্দের অর্থ বিস্তৃত হওয়া, বিচ্ছুরণ ঘটা, ছড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি।

ইসলামি ক্যালেন্ডারের ৮ তম মাস হলো শাবান মাস। এই মাসটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা এবং প্রার্থনার মাস। এই বরকতময় মাস সম্পর্কে হাদিসে একই কথা প্রতীয়িমান হয়।

শাবান মাসের মর্যাদা ও গুরুত্ব

নবি করিম (স.) শাবান মাসের গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও তাত্পর্যের বিবেচনায় এ মাসে অধিক হারে নফল ইবাদত-বন্দেগি করতেন। রমজানুল মুবারকের মর্যাদা রক্ষা এবং হক আদায়ের অনুশীলনের জন্য রসুলুল্লাহ্ (স.) শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা পালন করতেন।

এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, নবি করিম (স.)-কে জিগ্যেস করা হলো ‘আপনার কাছে মাহে রমজানের পর কোন মাসের রোজা উত্তম?’ তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মান প্রদর্শনের জন্য শাবানের রোজা উত্তম।’ (তিরমিজি)

হাদিস অনুযায়ী শবে বরাত কি?

আল-কুরআনে এমন কোনো সহিহ হাদিস বা আয়াত নেই যা রাতের তাৎপর্য  নির্দেশ করে কথা বলে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় অনেকে রাত উদযাপন করে আল্লাহর ইবাদতে সময় কাটায়। তবে কিছু যঈফ হাদিসে উল্লেখ আছে এই রাতের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে।

আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ, পরাক্রমশালী ও মহিমান্বিত, তিনি মধ্য শাবানের রাতে সর্বনিম্ন আসমানে অবতরণ করেন, যাতে ভেড়ার লোমের সংখ্যার চেয়েও বেশি ক্ষমা দান করেন। বানু কালব।'” (তিরমিযী: 739)

আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আরেকটি হাদীসে বলা হয়েছে যে, নবী (সাঃ) 14 ও 15 শাবানের রাতে এমনভাবে ব্যাপক প্রার্থনায় কাটিয়েছিলেন। যে তিনি মনে করেছিলেন যে তিনি মারা গেছেন। (আল-বায়হাকী ও আল-তাবারানী।

বিশিষ্ট আলেমদের মতে শবে বরাত কি?

ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এর মতেঃ

পাঁচটি রাত আছে যখন আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল হয়। এগুলো হল (১) জুমার রাত, (২) ঈদুল ফিতরের আগের রাত, (৩) ঈদুল আজহার আগের রাত, (৪) প্রথম রজবের রাত এবং (৫) নিসফ শাবানের রাত।

ইমাম মালিকের মতে শবে বরাত কি?

চারটি রাত আছে যেগুলোতে ধার্মিকতার দরজা খুলে দেওয়া হয়, (১) ঈদুল ফিতরের আগের রাত, (২) ঈদুল আজহার আগের রাত, (৩) আরাফাতের রাত (হজের সময় ৯ই যিলহজ্জ) এবং ( ৫) নিসফ শাবানের রাত।

১৫ শাবানের রোজা কি?

কোনো হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা নেই ১৫ শাবানের দিনে রোজা রাখার কথা। তাই ১৫ শাবান মাসে রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না। কিন্তু উপরের উল্লিখিত হিসেবে নবী (সাঃ) এই মাসে ঘন ঘন রোজা রাখতেন। 

শবে বরাত উদযাপন করা যাবে?

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই রাত উদযাপন করে থাকে। এই রাতে একে অপরকে মিষ্টি বিতরণ করে এবং কিছু মানুষ এই রাতে আতশবাজি দিয়ে উদযাপন করে।  এটি স্থনীয় ঐতিহ্যের প্রভাবের ফল ও এর কোনো ধর্মীয় তাৎপর্য নেই।

এমনকি কিছু পন্ডিত এটিকে বিদাহ (ধর্মে উদ্ভাবন) বলেছেন। ইরাকের লোকেরা বাচ্চাদের মিষ্টি বিতরণ করে। দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোতে হালওয়া নামে একধরনের মিষ্টি বা অন্যান্য উপাদেয় খাবার প্রতিবেশী, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং দরিদ্র-অভাবীদের মাঝে বিতরণ করে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে এই রাত উদযাপন করা হয় না।

উপসংহারঃ

এই রাতে কোনো ইবাদত করা ফরজ নয়। আপনি এই রাতে ভালো কাজ করা কাটাতে পারেন যেমন, বিশ্বে সকল মুসলাম এবং সকল মানুষের জন্য দোয়া করতে পারেন। আল-কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন। এবং আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের জন্য অন্য যেকোনো ভালো কাজ করতে পারেন। 

শবে বরাত নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে আপনার এলাকার মসজিদের ইমামকে জিজ্ঞাসা করুন বা ভালো আলেমদের শরণাপন্ন হোন, এতে মনের সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।

সম্পর্কিত আর্টিকেল

২টি মন্তব্য

  1. ভাই আপনি যে থিম ব্যবহার করছেন এরকম থিম কিভাবে কাস্টমাইজড করবো এবং থিমের নাম কি প্লিজ ভিডিও বানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

অ্যাডব্লকার ডিটেক্ট হয়েছে!

মনে হচ্ছে আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করতে হবে। যদি অ্যাডব্লকার ব্যবহার না করেন, তাহলে পেজটি রিফ্রেশ করুন।