তো আজকের বিষয় হচ্ছে – কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি? তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
হার্ডওয়্যার কি?
আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকলে তো অবশ্যই শুনেছেন হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার এর নাম। কম্পিউটার এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের নাম হচ্ছে হার্ডওয়্যার। হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটারের কোনো অস্থিত্বই নেই।
কম্পিউটারের মধ্যে আমরা সেসব প্রধান অংশগুলোকে দেখতে পাই মূলত সেগুলোই হচ্ছে হার্ডওয়্যার। যেমনঃ মাউস, কিবোর্ড, মনিটর, মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক, সিপিইউ, ইউপিএস ইত্যাদি।
বি.দ্রঃ ইতমধ্যে আমরা সিপিইউ সমন্ধে একটি আর্টিকেল লিখে রেখেছি। জানতে আমাদের ওয়েবসাইট এ ভিজিট করুণ আর জেনে নিন সিপিইউ কি?
সফটওয়্যার কি?
কম্পিউটারের প্রোগ্রামকে সফটওয়্যার বলে। একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে সফটওয়্যার প্রোগ্রামগুলো কম্পিউটারে চলে থাকে।
চলুন একটা উদাহরণ এর সাথে এই বিষয়বস্তুটাকে বুঝা যাক। আমি যদি মনিটরের কোথাও ক্লিক করতে চাই তো আমাকে অবশ্যই মাউস ব্যবহার করতে হবে আর যদি আমরা কোনো কিছু টাইপিং করতে চাই তো আমাকে কিবোর্ড এর সাহায্য নিতে হবে তাছাড়া আমরা টাইপিং করতে পারব না।
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কি আশা করি বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন আমাদের মূল বিষয় সমন্ধে জানি অর্থাৎ হার্ডওয়্যার কাকে বলে? কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি? কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এর কাজ কি? আপনি ধৈয্য আর সময় নিয়ে পুড়টা আর্টিকেল পড়ুন আরে জেনে নি হার্ডওয়্যার সমন্ধে।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি?
কম্পিউটারের মধ্যে আমরা যেসকল অংশগুলোকে দেখতে পাই এবং স্পর্শ করতে পারি তাই হলো হার্ডওয়্যার।
হার্ডওয়্যার কম্পিউটারের একটি ভৌত উপাদান এবং এই উপাদানটি Circuit Board, ICs এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স অংশ দিয়ে গঠিত।
কম্পিউটারের বডি সামগ্রিকভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে হার্ডওয়্যারের মধ্যে। অর্থাৎ হার্ডওয়্যার গুলো হচ্ছে – কিবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইউপিএস, মনিটর, সিপিইউ ইত্যাদি। এইসব অংশগুলোকে একত্রে করে তৈরি হয়ে থাকে কম্পিউটার।
এই যে আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তেছেন হোক মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটারের ডিসপ্লে তে এটাও কিন্তু হার্ডওয়্যারের অংশই। হার্ডওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের কোনো অস্তিত্ব নেই। আশা করতে পারি আপনি বুঝতে পারছেন হার্ডওয়্যার কি?
হার্ডওয়্যারের কয়টি অংশ?
হার্ডওয়্যার মূলত দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত। ১মটি হলো Internal Hardware এবং ২য়টি হলো External Hardwareহারদ্বারে। এই দুটি বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
Internal Hardwares
Internal Hardware বলতে কম্পিউটারের ভিতরের অংশগুলোকে বুঝানো হয়। অর্থাৎ কম্পিউটারের ভিতরে যে হার্ডওয়্যার এর উপাদান রয়েছে তাকেই Internal Hardware বলে।
ইন্টারনাল হার্ডওয়্যারগুলো হলো-
• CPU (সিপিইউ)
• MODEM (মডাম)
• MOTHERBOARD (মাদারবোর্ড)
• POWER SUPPLY (পাওয়ার সাপলাই)
• RAM (র্যাম)
• ROM (রম)
• DRIVE (ডাইভ)
• GRAPHICS CARD (গ্রাফিক্স কার্ড) ইত্যাদি।
External Hardwares
External Hardware বলতে কম্পিউটারের বাহিরের বিষয়বস্তুকে বোঝায়। কম্পিউটারে বাইরে ইনস্টল করার জন্য যে হার্ডওয়্যার ডিভাইস থাকে তাকে External Hardware বলে। এই ধরনের হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলোকে অতি সহজেই দেখা ও স্পর্শ করা যায়।
External Hardware গুলো হলো-
• KEYBOARD (কিবোর্ড)
• MOUSE (মাউস)
• PRINTER (প্রিন্টার)
• HARD DRIVE (হার্ড ডাইভ]
• MONITOR (মনিটর)
• SPEAKER (স্পিকার)
• HEADPHONE (হেডফোন) ইত্যাদি।
হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি?
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি? কম্পিউটার হার্ডওয়্যারকে মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলোকে নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে-
১. Input Device (ইনপুট ডিভাইস)
ইনপুট ডিভাইস বলতে এমন এক হার্ডওয়্যার ডিভাইসকে বোঝানো হয়েছে যা কম্পিউটারের ডেটা বা ইনফরমেশন প্রদান করে।
ইনপুট ডিভাইসগুলো কম্পিউটার ও ব্যবহারকারী মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে তোলে। ইনপুট ডিভাইসগুলোকে একটি ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল ডিভাইস হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের ইনপুট ডিভাইস রয়েছে। যেমন-
১. পয়েন্টিং ডিভাইসঃ যেমন- মাউস, টার্চপ্যাড, টার্চ স্কিন, মোশ্ন সেন্সর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, মাল্টি-টার্চ স্কিন, লাইট পেন ইত্যাদি।
২. গেম কন্ট্রোলার ডিভাইসঃ যেমন- গেম প্যাড, জয়স্টিকস, রিদ্ম গেম কন্ট্রোলার, স্টিয়ারিং হুইলস, মোশ্ন সেন্সিং, প্যাডেল ইত্যাদি।
৩. অডিও ইনপুট ডিভাইসঃ যেমন- মাইক্রোফোন, মিনি কিবোর্ড ইত্যাদি।
৪. ভিজ্যুয়াল এবং ইমেজিং ডিভাইসঃ যেমন- ওয়েবক্যাম, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, বারকোড রিডার, ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি।
কম্পিউটারের জনপ্রিয় ইনপুট ডিভাইসগুলো হলো-
১. মাউস
২. কিবোর্ড
৩. স্ক্যানার
৪. টার্চপ্যাড
৫. ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার
৬. মাল্টি টার্চ স্কিন
৭. গেম প্যাড
৮. জয়স্টিক
৯. মাইক্রোফোন
১০. ওয়েবক্যাম
১১. বায়োমেট্রিক স্ক্যানার
১২. বারকোড রিডার
১৩. ডিজিটাল ক্যামেরা
১৪. মোশন সেন্সর
১৫. গ্রাফিক্স কার্ড
১৬. লাইট পেন
১৭. মিনি কিবোর্ড
১৮ রিদম গেম কন্ট্রোলার
১৯. স্টিয়ারিং হুইলস
২০. প্যাডেল ইত্যাদি।
২. Output Device (আউটপুট ডিভাইস)
আউটপুট ডিভাইস বলতে কম্পিউটারের বাহিরের উপাদানগুলোকে বুঝানো হয়। আউটপুট ডিভাইস গুলো হলো- মনিটর, প্রজেক্টের, প্রিন্টার, জিপিএস, ভিডিও কার্ড ইত্যাদি।
৩. Processing Device (প্রসেসিং ডিভাইস)
কম্পিউটারের মাধ্যমে কোনো কাজ করতে হলে প্রথমে আমরা ইনপুট করি তারপর আমরা সেটির আউটপুট পেয়ে থাকি।
ইনপুট আর আউটপুট এর মধ্যে প্রসেসিং ডিভাইসের মাধ্যমে ক্রিয়া কাজ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়াকে প্রসেসিং ডিভাইস বলে। এই ডিভাইসগুলো কম্পিউটারের মধ্যে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এর কাজ করে থাকে।
প্রসেসিং ডিভাইসের উদাহরণ হলো- সিপিইউ (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট) আর জিপিইউ (গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট) ইত্যাদি।
৪. Storage Device (স্টোরেজ ডিভাইস)
স্টোরেজ ডিভাইস হলো কম্পিউটারের এমন এক উপাদান যাতে আমরা ডেটা স্থায়ীভাবে বা সাময়িকভাবে এতে জমা করে রাখতে পারি।
এককথায় স্টোরেজ বলতে আমরা সবাই মেমোরি বুঝে থাকি, যাতে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ফাইল, ছবি, গান, ইত্যাদি সংগ্রহ করে থাকি। স্টোরেজ ডিভাইস বলতে তাকেই বুঝানো হয়ে থাকে।
আশা করি বুঝতে পারছেন। স্টোরেজ ডিভাইস এর উদাহরণ হচ্ছে- হার্ডডিস্ক, ফলপ্রি ডিস্ক, এসএসডি, এইচডিডি, ডিভিডি ইত্যাদি।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার নিয়ে আমাদের শেষ কথাঃ
পরিশেষে আমরা আশা করতে পারি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পরার পর বুঝতে পারছেন যে, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি? যদি কোথায় আপনি বুঝতে না পারেন তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি তার রিপ্লাই অবশ্যই পাবেন।
আর পরবর্তী আর্টিকেল আপনি কি বিষয়ে জানতে চান তা জানাতে পারে। ইনশাআল্লাহ সেই বিষয় এ আমরা আর্টিকেল লিখব। ধন্যবাদ।