টিপস এন্ড ট্রিকসলাইফ স্টাইলশিক্ষা ও স্বাস্থ্য

বহুল আলোচিত সকল যৌন বিষয়ক টিপস জেনে নিন এক আর্টিকেলে

সূচিপত্র দেখুন

বিভিন্ন কারণে আমরা অনেক সময় যৌনতা রিলেটেড সমস্যার মুখোমুখি হয়। ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া কিংবা বিষয়টি কারো সাথে শেয়ার করা আমাদের জন্যে অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। 

এক্ষেত্রে সমাধান হিসাবে আমরা চাইলে আগে থেকেই যৌন বিষয়ক টিপস সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারি। জেনে রাখতে পারি যৌন শক্তি কমে যাওয়ার কারণ, যৌন শক্তি বৃদ্ধির উপায় এবং অতিরিক্ত যৌন শক্তি কমানোর উপায়সহ সম্পর্কিত সকল তথ্য।

আর এ-কাজে সাহায্য করছে আমাদের আজকের এই গাইডলাইনটি। সুতরাং সাথেই থাকুন।

যৌন শক্তি কমে যাওয়ার কারণ কি?

শুরুতেই বলে রাখি যৌন শক্তি কমে যাওয়াটা হলো একধরণের রোগ৷ আর এই রোগের নাম লো লিবিডো। এই ধরণের সমস্যা অস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী যেকোনো ধরণেরই হতে পারে। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সারা জীবনই ওঠানামা করতে পারে এই সমস্যা।

আর যদি কারণ জানতে সেক্ষেত্রে বলবো মূলত যৌন আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা হ্রাস পেলে যৌন শক্তি কমে আসে। সামগ্রিক যৌন ড্রাইভ বা যৌন ক্রিয়াকলাপের আকাঙ্ক্ষার পরিমাণ নিয়ে সাধারণত এই রোগের হার বা পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

বিশেষজ্ঞের মতে মানুষের জীবনে জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিক কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয় এই রোগ। আর হরমোনের ক্ষেত্রে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে:

  • টেসটোসটেরন
  • ইস্ট্রোজেন
  • নিউরোট্রান্সমিটার
  • ডোপামিন
  • এবং অক্সিটোসিন

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন লিবিডোর মূলত কোনো সঠিক বা ভুল স্তর নেই। কারণ এই রোগের স্তর কখনোই এক জায়গায় থাকে না। বরং তা উঠানামা করতে পারে। 

যাদের এই ধরণের সমস্যা আছে তাদের সাহায্য গাইনি ডাক্তার কিংবা মানসিক ডক্টরের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পড়ে। তবে শুরুতে গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটাই অধিক অর্থবহ।

যাইহোক! শুরুতেই বলেছি বেশ কিছু জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিক কারণে আপনার লো লিবিডো হতে পারে। আসুন এবারে এই যৌন শক্তি কমে যাওয়ার বেশকিছু কারণ সম্পর্কে জানি:

  • ক্যান্সার
  • দীর্ঘস্থায়ী কিডনিজনিত রোগ
  • যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা
  • ডায়াবেটিস
  • মাথাব্যথা
  • হৃদরোগ
  • হাইপারপ্রোল্যাক্টিনেমিয়া
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • হাইপোথাইরয়েডিজম
  • রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস
  • সম্পর্কের সমস্যা
  • যোগাযোগের সমস্যা
  • বিশ্বাস বা ঘনিষ্ঠতায় সমস্যা
  • কাজের চাপ
  • পরিবার বা সাধারণ জীবনের চাপ
  • হতাশার অনুভূতি
  • শারীরিক ক্লান্তি 

যৌন শক্তি বৃদ্ধির উপায় কি?

বাংলাদেশে বর্তমানে মানসম্মত লো লিবিডো বা লো সেক্স ড্রাইভ এর চিকিৎসা আছে। সুতরাং যৌন শক্তি বৃদ্ধির উপায় হিসাবে আপনি সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। 

এক্ষেত্রে একাধিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের সাথেও দেখা করার প্রয়োজন পারে। এই রোগ সারাতে আপনি যেসব প্রফেশনাল ব্যাক্তির সাহায্য নিতে পারেন সেসব প্রফেশনাল ব্যাক্তিদের একটি প্রাইমারি লিস্ট নিচে শেয়ার করা হলো:

  • প্রাইমারি কেয়ার ফিজিশিয়ান বা PCP
  • সেক্স থেরাপিস্ট
  • ভালো মনোবিজ্ঞানী
  • স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা গাইনি ডক্টর
  • ইউরোলজিস্ট
  • এন্ডোক্রিনোলজিস্ট

আর যৌন শক্তি বৃদ্ধির উপায় হিসেবে নিচের টিপসগুলি ফলো করতে পারেন:

যোগাযোগ: আপনার প্রয়োজন এবং উদ্বেগ সম্পর্কে পার্টনারের সাথে খোলামেলা আলোচনা করুন। এক আরেকজনকে মানসিক সাপোর্ট দিন এবং যে কোনো সমস্যা শেয়ার করার চেষ্টা করুন।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের চেষ্টা করুন। জার্নালিং, ব্যায়াম কিংবা নিজেকে সময় দেওয়ার মাধ্যমে আপনি এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

হরমোন থেরাপি: প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে হরমোন থেরাপি বা এইচটি সার্ভিস নিন। এই সার্ভিস আপনার হরমোনের মাত্রা বাড়াবে এবং লো লিবিডো রোগ সারাবে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধির খাবার কি কি?

যৌন শক্তি বৃদ্ধির খাবারকে সাধারণত লিবিডো বুস্টার বলা হয়। আপনিও এই লিবিডো বুস্টার ফুড সম্পর্কে জানতে চান? যদি চান সেক্ষেত্রে নিচের পয়েন্টগুলি মনোযোগ সহকারে পড়ুন:

  • আপেল:  পলিফেনল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদানের কারণে আপেলকে সেরা লিবিডো বুস্টার ফুড বলা হয়ে থাকে।
  • কলা: কলায় থাকা পটাসিয়ামের কারণে মানবদেহে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি এটি দেহে রক্ত ​​সঞ্চালন বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
  • বাদাম: বাদামে আপনি সেলেনিয়াম নামক একটি রাসায়নিক যৌগ পাবেন। আর এই উপাদানকে লো লিবিডো রোগীর মহা ঔষধ বলা হয়।
  • গাজর: গাজর আপনার শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করবে৷ যে শক্তিটা মূলত গাজরের রাসায়নিক ক্যারোটিনয়েড থেকে আসে।
  • মরিচ: বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে পুরুষরা নিয়মিত মরিচ খাবে সে পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাবে। ফলে যৌন শক্তিও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।
  • চকোলেট: ডোপামিনের মাত্রা বাড়িয়ে আপনার মস্তিষ্কের আনন্দ এবং এক্সাইটম্যান্টকে বাড়িয়ে দেবে এই চকোলেট।
  • কফি: গবেষণা বলছে দুই থেকে তিন কাপ কফি ইরেক্টাইল ডিসফাংশন প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। যা লো লিবিডো রোগীর রোগ সারাতে মেডিসিনের মতো কাজ করবে।
  • রসুন: রসুনে অ্যালিসিনের উচ্চ মাত্রা থাকে বলে এটি পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ের যৌন অঙ্গের রক্ত প্রবাহকে বাড়িয়ে তোলে।
  • সবুজ রঙের শাক: লো লিবিডো রোগ সারাতে নিয়মিত সবুজ রঙের শাক খেতে পারেন। কারণ শাকে পাবেন রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধিকারী ফোলেট যৌগ এবং সেইসাথে টি-বুস্টিং ম্যাগনেসিয়াম।
  • অলিভ অয়েল: বাংলাদেশে যদিও এই তেলের খুব একটা ব্যবহার নেই। তবে নিজের দেহের নিজেকে সারাতে এই তেল আপনাকে খেতেই হবে। আশা করি ভালো ফল পাবেন।
  • ডালিম: আপনি জানেন কিনা জানি না….তবে ডালিম একটি সুপারফুড। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি এই ফল যৌন শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে৷

যৌন শক্তি বৃদ্ধির প্রাকৃতিক উপায

আপনি জানেন যৌন শক্তি বৃদ্ধির প্রাকৃতিক উপায়গুলি ফলো করলে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন? হ্যাঁ! এমনটাই বলছে গবেষণা। আসুন সেসব ম্যাজিক্যাল উপায় সম্পর্কে আলোচনক করা যাক

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম করুন এবং ওয়েট ক্যারি টাইপের ব্যায়াম করুন। প্রয়োজনে জিমে ভর্তি হোন। এই ধরণের ব্যায়াম আপনার স্ট্যামিনা বাড়াতে পারে, মেজাজ ঠিক রাখতে পারে এবং যৌন শক্তি বাড়াতে আপনাকে যথেষ্ট সহায়তা করতে পারে।

মানসিক চাপকে “না” বলুন

মানসিক চাপ না কমালে কখনোই লো লিবিডো সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের উপায় নিয়ে রিসার্চ করতে পারেন, নিজেকে সময় দিতে পারেন এবং সবসময় পজেটিভ থাকতে পারেন।

খারাপ অভ্যাস বাদ দিন

ধূমপান, অবৈধ ড্রাগ এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল নেওয়া সবকিছুই আপনার লো সেক্স ড্রাইভের কারণ হতে পারে। সুতরাং যত কঠিনই হোক…ধীরে ধীরে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসুন।

ইতি কথা

মনে রাখবেন যৌন সম্পর্কিত যেকোনো শারীরিক সমস্যা একসময় আপনাকে ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের রোগী বানিয়ে দিতে পারে। সুতরাং সময় থাকতেই নিজেকে সময় দিন এবং যেকোনো গোপন রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।

সম্পর্কিত আর্টিকেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

অ্যাডব্লকার ডিটেক্ট হয়েছে!

মনে হচ্ছে আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করতে হবে। যদি অ্যাডব্লকার ব্যবহার না করেন, তাহলে পেজটি রিফ্রেশ করুন।