ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম ও নামাজের নিয়ত আরবিতে
এই আর্টিকেলে ঈদের নামাজের নিয়ম, ঈদের নামাজ কয় রাকাত? ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত আরবিতে, ঈদের নামাজ কি ওয়াজিব? ও ইত্যাদি ঈদুল আযহা সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহা পালিত হয়। আমরা যদি হিসাব করি তাহলে আগামী ২৯শে জুন পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ঈদুল আজহা হলো ত্যাগ ও উৎসর্গের ঈদ।
হজের মাসে আত্মত্যাগের এ ঈদ মুসলিম উম্মাহর সব ধরনের পশুত্বকে নির্মূল করে। কুরবানি ঈদের নামাজ সকাল সকাল আদায় করা হয়। ঈদের নামাজের পরেই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পশু কুরবানি করা হয়।
বছরে দুইবার ঈদের নামাজ পড়তে হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত করার কারণে অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। তাই মুসলিম ভাইদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি নিয়ে আসলাম। চলুন তাহলে ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
ঈদুল আযহার নামাজ পড়ার নিয়ম
ঈদের নামাজ দুই রাকাত। যা আদায় করা ওয়াজিব ও এই নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে হয়। ঈদের দুই রাকাত নামাজে অতিরিক্ত ছয়বার তাকবির দিতে হয়।
প্রথম রাকাতঃ আল্লাহ তায়াল উদ্দেশে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরের সাথে ইমামের পিছনে আদায় করছি বলে নিয়ত বাঁধতে হয়। প্রথমেই তাকবিরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধবেন।
ইমাম ও মুসল্লিরা নিয়ত বাঁধার পর ছানা দোয়াটি পড়বেনঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা ঝাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।
তারপর ইমামের উচ্চস্বরে তাকবির বলার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরাও তাকবির বলবেন। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবির বলার সময় উভয় হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দিবেন। তৃতীয় তাকবিরের সময় উভয় হাত কান বরাবর উঠিয়ে না ছেড়ে হাত বাধবেন।
তারপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা মিলিয়ে রুকু-সিজদা দিবেন তখন মুসল্লিরাও ইমাম সাহেবের সাথে রুকু-সিজদা দিবেন।
দ্বিতীয় রাকাতঃ ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলানোর পর রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ৩ তাকবির প্রথম রাকাতের মতো আদায় করবেন। তারপর রুকু-সিজদা দেওয়ার পর অন্যান্য নামাজের মতোই সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।
একই নিয়মে ঈদুল ফিতর নামাজ ও আদায় করা হয়। উভয় ঈদের আগে-পরে কোনো নফল বা সুন্নত নামাজ নেই। এমনকি ঈদের নামজের জন্য কোনো আজান বা ইক্বামতেরও প্রয়োজন হয় না।
আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সুস্থভাবে ঈদের নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত আরবিতে
نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
ঈদুল আযহার নামাযের আরবি নিয়তের বাংলা উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈদের নামাজ বিষয়ক কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
ঈদের সালাত আদায় করা কি ওয়াজিব?
হানাফী মাযহাব অনুসারে ঈদের নামাজ ওয়াজিব, মালিকি ও শাফেয়ী মাযহাব অনুসারে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ এবং হাম্ববলী মাযহাব অনুসারে ঈদের নামাজ ফরজ। কোনো কোনো ইসলামী পণ্ডিতের মতে ঈদের নামাজ ফরজে আইন এবং কোনো কোনো ইসলামী পণ্ডিতের মতে ঈদের নামাজ ফরজে কেফায়া। কিন্তু কারো কারো মতে ঈদের দুই রাকায়াত নামাজ নফল। সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
ঈদের নামাজ কয় রাকাত?
ঈদের নামাজ দুই রাকাত।
ঈদের নামাজ কয় তাকবীর?
ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয় কিংবা বারো তাক্ববির রয়েছে। ছয় তাকবিরের ক্ষেত্রে প্রথম রাক্বাতের শুরুতে অতিরিক্ত তিন তাক্ববির এবং দ্বিতীয় রাক্বাতে অতিরিক্ত তিন তাক্ববির দিতে হয়।
ঈদের নামাজের ফরজ কয়টি?
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের মতোই ঈদের সালাতের ফরজও সাতটি।
ঈদের নামাজ কি ফরজ?
হানাফী মাযহাব অনুসারে ঈদের নামাজ ওয়াজিব, মালিকি ও শাফেয়ী মাযহাব অনুসারে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ এবং হাম্ববলী মাযহাব অনুসারে ঈদের নামাজ ফরজ। কোনো কোনো ইসলামী পণ্ডিতের মতে ঈদের নামাজ ফরজে আইন এবং কোনো কোনো ইসলামী পণ্ডিতের মতে ঈদের নামাজ ফরজে কেফায়া। কিন্তু কারো কারো মতে ঈদের দুই রাকায়াত নামাজ নফল। সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
শেষ কথাঃ আমাদের ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।