কুরবানীর গোস্ত ভাগের নিয়ম ও পদ্ধতি – কোরবানির মাংস বন্টন হাদিস
জানুনঃ কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়? কুরবানির মাংস বন্টন পদ্ধতি, কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে? কুরবানীর গোস্ত বন্টনের হাদিস।
কোরবানির ঈদ হলো মুসলিম উম্মাহের সর্ববৃহত ও দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব। আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য লাভের জন্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সবাই কোরবানি করে থাকে।
ঈদুল আজহা প্রায় আমাদের সন্নিকটে অবস্থান করছে। এমতাবস্থায়, আমাদের উচিৎ কোরবানির ঈদের বিষয়ে ও কোরবানির বিষয়ে নানা হাদিস আমাদের জানা। সেই সাথে যেহেতু কোরবানির ঈদে মাংস ভাগ করতে হয়, তাই এই কোরবানির গোশত বন্টনের নিয়ম আমাদের সবারই জানা উচিৎ।
চলুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কোরবানির গোস্ত ভাগের নিয়ম ও মাংস বন্টনের হাদিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়?
কোরবানির মাংস বানানোর পর সব মাংসকে সমান তিনভাগে ভাগ করতে হবে। পরিমাপের ক্ষেত্রে দাড়িপাল্লা ব্যবহার করা যেতে পারে।
কুরবানীর গোস্ত বন্টনের হাদিস
রাসূলুল্লাহ (স.) কুরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর।’(বোখারি-৫৫৬৯)। ‘আহার করাও’ বাক্য দ্বারা অভাবগ্রস্থকে দান করা ও ধনীদের উপহার হিসেবে দেয়াকে বুঝায়।
কুরবানির মাংস বন্টন পদ্ধতি
মাংস সমান তিন ভাগ করার পর এক ভাগ গরিব-দুঃখীকে, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনকে এবং এক ভাগ নিজে খাওয়ার জন্য রাখতে হয়।
কোরবানির মাংস কতদিন রাখা যাবে?
ইসলামের প্রথম যুগে তিন দিনের বেশী কোরবানির গোশত রাখার অনুমতি ছিল না। তিন দিনের বেশী সময় হলেই সদকা হিসেবে বিলিয়ে দিতে হতো দরিদ্র মানুষের মাঝে।
সে সময় আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছিলেন, ‘তোমরা তিন দিন পর্যন্ত কোরবানির গোশত রাখতে পারো। এরপর অবশিষ্ট যা থাকে, সদকা করে দাও।’
পরবর্তীতে মানুষের জীবনে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য এলে, সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দরিদ্র আগমনকারীদের কথা বিবেচনা করে আমি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা নিজে খাও, অন্যকে খাওয়াও; সংরক্ষণও করতে পারো।’ ( সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৭১)
প্রখ্যাত ফকিহ ইবনু আবদিল বার (রহ.) লিখেছেন, সম্মানিত আলিমগণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে, তিন দিনের পরেও কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অবকাশ রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা রহিত। ( আত-তামহিদ : ৩/২১৬)
(বিস্তারিত জানতে দেখুন— তথ্যসূত্র : আল বাহরুর রায়িক, ইবনু নুজাইম : ৮/২০৩; আল মাজমু, নববি : ৮/৪১৯; নাইলুল আওতার, শাওকানি : ৬/২৬৭; ফাতহুল বারি, ইবনু হাজার : ১০/৩০,৩১)