ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করার বা পড়ার নিয়ম
চলুন জেনে নেয়া যাকঃ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করার বা পড়ার নিয়ম, ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত, ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে, ঈদের নামাজের নিয়ত, ঈদুল ফিতরের নামাজের তাকবীর।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। মুসলমানদের প্রতি বছরে ঈদের সংখ্যা দুইটি। সেগুলো হলো ঈদ-উল ফিতর (রোজা ঈদ) ও ঈদ-উল আযাহা (কোরবানি ঈদ)।
ইসলামের ৫টি রুকুনের মধ্যে একটি হচ্ছে নামাজ। ঈদের দিনও সকল মুসলমান এক সাথে নামাজ আদায় করে ও আনন্দ বিনিময় কোশল করে থাকে।
আজকে আমরা জানব – ঈদ-উল ফিতরের নামাজ আদায় করার বা পড়ার নিয়ম। তাহলে চলুন জেনে নেই, ঈদুল ফিতরের নামাজ কিভাবে আদায় করা হয়ে থাকে।
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত
ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ার জন্যে আমাদের সবাইকে শুরুতেই নামাজ আদায় করার নিয়ত করতে হবে।
নিচে আরবিতে ও বাংলা উচ্চারণসহ ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত দেয়া হয়েছে।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে
نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ التَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَضَيْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ
ঈদুল ফিতরের নামাযের আরবি নিয়তের বাংলা উচ্চারন: ‘নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাইন সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতিত তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবার’।
ঈদুল ফিতর নামাজের বাংলা নিয়ত
ইমামের পেছনে কেবলামুখি হয়ে ঈদ-উল ফিতরের দু’রাকাত ওয়াজিব নামাজ ৬ তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি।
এরূপ নিয়ত করে দুই হাত উপরে তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবিরে তাহরিমা বাঁধতে হবে। তারপর সানা (সুবহানাকাল্লাহুম্মা… পুরোটাই) পাঠ করতে হবে।
ঈদুল ফিতরের নামাজের তাকবীর
এরপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহর আগে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবির বলতে হবে। প্রথম দুই বার কান পর্যন্ত হাত তুলে ছেড়ে দিতে হবে।
কিন্তু তৃতীয়বার বলার সময় হাত বেঁধে নিতে হবে। প্রত্যেক তাকবিরের পর তিনবার অথবা পাঁচবার কিংবা সাতবার সুবহানাল্লাহ বলা যায় এতটুকু সময় পরিমান থামবে (যারা ইমামের পিছনে থাকবে তারা তিনবার অথবা পাঁচবার কিংবা সাতবার সুবহানাল্লাহ পাঠ করবে)।
তারপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরায়ে ফাতেহার সাথে অন্য একটি সূরা মেলাতে হবে। এরপর রুকু, সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে।
এবার অন্যান্য নামাজের মতো বিসমিল্লাহর পরে সূরা ফাতেহা পড়ে আরেকটা সূরা মেলাতে হবে। তারপর তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলার মাধ্যমে তিনটা তাকবির সম্পন্ন করতে হবে।
এখানে প্রতি তাকবিরের পর হাত ছেড়ে দিতে হবে এবং চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যেতে হবে। এরপর সেজদা এবং আখেরি বৈঠক করে যথারীতি সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
ঈদের জামাত সম্পর্কীত মাসয়ালা
১. ইমাম সাহেব জুমার মতো দু’টি খুতবা দেবেন। তবে জুমার খুতবা দেওয়া ফরজ আর ঈদের খুতবা দেওয়া সুন্নত এবং ঈদের খুতবা শুনা ওয়াজিব। তাই ওই সময় কথাবার্তা, চলাফেরা, টাকা উঠানো ইত্যাদি যেকোনো কাজ করা নিষিদ্ধ।
২. ঈদের নামাজের আগে নারী হোক কিংবা পুরুষ, বাড়িতে কিংবা মসজিদে অথবা ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া মাকরূহ। সম্ভব হলে এলাকার সবাই একস্থানে একত্রে ঈদের নামাজ পড়া উত্তম। তবে কয়েক জায়গায় পড়াও জায়েজ।তবে আমরা সকলেই ঈদগাহে কিংবা এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকি।
৩. যদি কোন কারণে কিংবা নামাজ নষ্ট হয়ে গেলে তার কাজা করতে হবে না। যেহেতু ঈদের নামাজের জন্য জামাত শর্ত। তবে বেশকিছু লোকের যদি নামাজ নষ্ট বা ছুটে গেলে একজনকে ইমাম বানিয়ে নামাজ আদায় করা যাবে।
৪. যদি ইমাম সাহেবকে দ্বিতীয় রাকাতে পেলে সালামের পর যখন ওই ব্যক্তি ছুটে যাওয়া রাকাতের (প্রথম রাকাত) জন্য দাঁড়াবে তখন প্রথমে সানা (সুবহানাকাল্লাহুম্মা), তারপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে ফাতেহা ও কেরাতের পর রুকুর পূর্বে তাকবির বলবে। ফাতেহার আগে নয়।
৫. ইমাম তাকবির ভুলে গেলে রুকুতে গিয়ে বলবে, রুকু ছেড়ে দাঁড়াবে না। তবে রুকু ছেড়ে দাঁড়িয়ে তাকবির বলে আবার রুকুতে গেলেও নামাজ নষ্ট হবে না। বেশি লোক হওয়ার কারণে সহু সিজদাও দিতে হবে না।
শেষ কথাঃ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করার বা পড়ার নিয়ম – জেনে আপনি কি শিখতে পাড়লেন এবং আপনার কোথায় ঈদের নামাজ ভুল হতো কিংবা আমরা যে কয়টি মাসয়ালা তুলে ধরেছি সেগুলো জেনে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন,
তো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন ও পরবর্তী কোন বিষয়ে জানতে চান তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন এবং আমাদের পাশেই থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।