কম্পিউটারের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট ডিভাইস হচ্ছে কীবোর্ড ও মাউস। মাউস কি তা আমরা আগের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। তাহলে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো কীবোর্ড কাকে বলে? কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ? কীবোর্ড কত প্রকার? কীবোর্ড পরিচিতি ইত্যাদি বিষয়।
কাগজে লিখার জন্য আমরা কলম ব্যবহার করি। তেমনি কম্পিউটারে কোন কিছু লিখার জন্য আমরা যে ইনপুট ডিভাইস ব্যবহার করি তা হলো কীবোর্ড। বেশি কথা না বলে চলুন জেনে নেই কীবোর্ড কি?
কীবোর্ড কি (What is keyboard in Bengali)?
Keyboard হল কম্পিউটারের সবচেয়ে প্রধান ইউনপুট ডিভাইস যা ব্যবহারকারীকে কম্পিউটার ও অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে পাঠ্য ইনপুট করতে সাহায্য করে থাকে।
কীবোর্ড একাধিক বাটন নিয়ে গঠিত যেখানে অনেক numbers, letters, symbols key থাকে তাছাড়া অসংখ্য Function key থাকে যার মাধ্যমে খুব সহজে আমরা কম্পিউটারকে Command করতে পারি। আশা করি কম্পিউটার কীবোর্ড কি ও কীবোর্ড কি ধরনের ডিভাইস তা আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
কীবোর্ডের সংজ্ঞা – কীবোর্ড কাকে বলে?
যে প্রধান ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে কম্পিউটারকে Instructions দেওযা হয় বা Command করা হয় তাকে কীবোর্ড বলে।
কিবোর্ড এর পূর্ণরূপ কি (Full form of keyboard)?
কীবোর্ড এর Full form হলো
K -keys
E -Electronic
Y -Yet
B -Board
O -Operating
A -A To Z
R -Response
D -Directly
কীবোর্ড লেআউট কত প্রকার?
Keyboard layout প্রধানত তিন প্রকার।
1: QWERTY Keyboard
2: AZERTY Keyboard
3: DVORAK Keyboard
কীবোর্ড লেআউট এর প্রকারভেদ (Types of keyboard layout in Bengali)
1: QWERTY Keyboard
QWERTY কীবোর্ড হলো সব থেকে বেশি আধুনিক কীবোর্ড Layout। 1874 সালে Typewriter এর উদ্ভাবক Christopher Latham Sholes সম এটির ডিজাইন করেছিলো। একবার আপনি আপনার কীবোর্ডের দিকে লক্ষ্য করুন কিবোর্ডের উপরের বাম দিকে দেখুন ডান দিক পর্যন্ত ৬টি অক্ষর Q-W-E-R-T-Y টি অক্ষর কে QWERTY বলে।
2: AZERTY Keyboard
AZERTY এই ধরনের কীবোর্ড গুলো ফ্রান্সের দেশগুলোতে বেশি ব্যবহার করা হয়। কীবোর্ডের উপরে বাম দিক থেকে ডান দিক পর্যন্ত A-Z-E-R-T-Y এই ৬টি অক্ষর কে AZERTY বলে। QWERTY Keyboard এর বাম দিক থেকে ডান দিক পর্যন্ত যে ৬টি অক্ষর ছিলো তার জায়গায় AZERTY Keyboard এর অক্ষর গুলো থাকে।
3: DVORAK Keyboard
1936 সালে Dr. August Dvorak ও William Dealey (DVORAK) কীবোর্ড ডিজাইন করেছিলেন। QWERTY Keyboard layout এর থেকে স্পিড বাড়ানোর জন্য।
কীবোর্ড keys কত প্রকার (types of keyboard keys in Bengali)
চলুন তাহলে কীবোর্ড keys কত প্রকার ও কি কি তা জেনে নেই।
কিবোর্ড মূলত ৫ প্রকারের হয়ে থাকে। তবে বেশী ফাংশনালিটির জন্য অনেক কিবোর্ডে অতিরিক্ত কি থাকে যেগুলো নরমাল কিবোর্ডে থাকেনা।
1: Function Keys
কীবোর্ডের উপরে সারিতে function keys গুলো থাকে। কীবোর্ডের ফাংশন ১২টি তা হলো F1, F2, F3, F4, F5, F6, F7, F8, F9, F10, F11 এবং F12 এই বারোটি keys হলো ফাংশন keys. ফাংশন কত প্রকার ও কি কি আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
2: Control Keys
Control keys হলো কীবোর্ডের অন্যতম একটি key. কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে অন্যান্য key গুলোর সাথে এটিকে একসাথে চাপতে হয়। এটি করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কমান্ড ও বিভিন্ন কর্ম ((((পারিনা))))কন্ট্রোল কী বিভিন্ন কমান্ডের শর্টকাট হিসেবে কাজ করে। কীবোর্ডের কন্ট্রোল দুইটি। আশা করি আপনারা কীবোর্ডের কন্ট্রোল কি ও কয়টি তা জানতে পেরেছেন।
3: Alphabet Keys
A থেকে Z পর্যন্ত সমস্ত বর্ন মালাকে অ্যালফাবেট বলা হয়। Alphabet keys এর মাধ্যমে কম্পিউটারে বাক্য ও শব্দ লিখা হয়।কম্পিউটার কিবোর্ড এ Alphabet Keys এর সংখ্যা হলো ২৬টি।
4: Number Keys
কীবোর্ডের ডানদিকের ০ থেকে ৯ পর্যন্ত keys গুলোকে নাম্বার বলে।কম্পিউটার কীবোর্ডে মোট ১৭টি নাম্বার থাকে।
5: Navigation Keys
পিউটার স্ক্রিনে কার্সার ও মাউস পয়েন্টার সরাতে নেভিগেশন ব্যবহার করা হয়। নেভিগেশনের keys উদাহরণ হলো Arrow, Rihgt arrow, UP arrow, and Down arrow, and Page up, page down, Home, and End keys ইত্যাদি।
কীবোর্ড কয় প্রকার ও কি কি?
কীবোর্ড কে প্রধানত আট ভাগে ভাগ করা যায়। সে গুলো হলঃ
1: Enhanced Keyboard
2: Multimedia Keyboard
3: Wireless Keyboard
4: Gaming Keyboard
5: Flexible Keyboard
6: Virtual Keyboard
7: Membrane Keyboard
8: Mechanical Keyboard
1: Enhanced Keyboard
Enhanced Keyboard গুলো বর্তমানে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয়। Enhanced Keyboard খুব আধুনিক এই কীবোর্ডে অতিরিক্ত key থাকে। বর্তমানে এই ধরনের কীবোর্ডে 101 থেকে 102 টি key থাকে।
2: Multimedia Keyboard
Multimedia Keyboard বেসিক key এর সাথে extra কিছু key থাকে। যেমন ভলিউম কন্ট্রোল,মিডিয়াপ্লেয়ার ইত্যাদি। তাছাড়া Multimedia Keyboard এর সাইডের দিকে USB, Microphone, Headphone ইত্যাদি অপশন ও আছে।
3: Wireless Keyboard
Wireless Keyboard এর অর্থ হলো তারবিহীন কীবোর্ড। ওয়ারলেস কীবোর্ডে কোন তার থাকে না।কম্পিউটার থেকে কিছুটা দূরে থেকে ওয়ারলেস কীবোর্ডের দ্বারা কম্পিউটারে কাজ করা যায়। রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি এর মাধ্যমে ওয়ারলেস কীবোর্ড ও ব্যবহারকারীর সাথে কম্পইউটারের Commuication হয়।
4: Gaming Keyboard
গেইম খেলার জন্য মূলত Gaming Keyboard তৈরি করা হয়েছে। গেমিং কীবোর্ডের দাম নরমাল কীবোর্ডের তুলনায় একটু বেশি হয়।
5: Flexibel Keyboard
Flexibel Keyboard গুলোকে খুব সহজে ভাঁজ করা যায় যার ফলে খুব সহজেই ব্যাগ বা পকেটে কীবোর্ডকে বহন করা যায়। Flexibel Keyboard গুলোকে শুধু মাত্র Solid Surface রেখে ব্যবহার করা যায়।
6: Virtual Keyboard
Virtual Keyboard হলো এক ধরনের স্ক্রীন কীবোর্ড। কম্পিউটার স্ক্রীনে কীবোর্ডে ছবি প্রদর্শিত হয় ও ব্যবহারকারীরা নিজের ইচ্ছে মতো মাউসের মাধ্যমে কম্পিউটারের স্ক্রীনের কীবোর্ড key প্রস করে নিজের কাজ করতে পারে। অনেক সময় ল্যাপটপের কীবোর্ড নষ্ট হয়ে যায়।
ল্যাপটপের কীবোর্ডের দাম অনেক বেশি হয় তাই vritual Keyboard সাময়িক কাজের জন্য ব্যবহার করা যায়। কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য ফিজিক্যাল কীবোর্ডের প্রয়োজন হয় না স্ক্রীন কীবোর্ডের মাধ্যমে সব কাজ করা হয় ও Vritual Keyboard এর দাম ও কম হয়।
7: Membrane Keyboard
Membrane তার অর্থ হলো পর্দা। Membrane Keyboard রাবারের পর্দা দিয়ে তৈরি করা হয়। Membrane Keyboard এর সুইচগুলোর ভিতরের দিকে রাবারের আবরণ দেওয়া থাকে। Normal use এর জন্য Membrane Keyboard গুলো ব্যবহার করা হয়।
8: Mechanical Keyboard
Mechanical Keyboard এর প্রত্যেকটা Key আলাদা হয়। প্রতিটি Key স্প্রিং লাগানো থাকে। যদি আপনি গেমার প্রোগ্রামার বা Typewriter হয়ে থাকেন তাহলে মেকানিক্যাল কীবোর্ড আপনার জন্য সবথেকে ভালো অপশন কারণ হলো মেকানিক্যাল কীবোর্ডের প্রতিটি সুইচ গুলো আলাদা ভাবে ডিজাইন করা থাকে।
কীবোর্ডের কোন বাটনের কি কাজঃ
1: Alt Key: Alternate অর্থ হলো বিকল্প কী। Alt Key সাথে আরেকটি কী চাপলে কম্পিউটারে বিকল্প কাজ করা যাবে।
2: F1-F2: F1-F2 হলো কম্পিউটারের Function keys. F1-F2 এই প্রতিটি key গুলোর বিকল্প কিছু কমান্ড আছে।
3: Tab Key: কার্সরকে পরবর্তী Tab স্পেসে যাওয়ার জন্য সাহায্য করে।
4: Backspace Key: আগের অবস্থানে থাকা অক্ষরটি মুছতে Backspace key সাহায্য করে।
5: Caps Lock Key: Caps Lock key এর সাহায্যে সমস্ত লেখা বড় হাতের অক্ষরে লিখা যায়।
6: Shift Key: কোন একটি অক্ষর কে বড় বা ছোট অক্ষরের টাইপ করার জন্য Shift Key ব্যবহার করা হয়।
7: Enter Key: Enter Key করলে নতুন লাইন থেকে লিখা শুরু হয়।
8: Delet Key: কোনো বাক্য বা অক্ষর মুছতে সাহায্য করে।
9: Page Up: কার্সারকে উপরের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
10: Page Down: কার্সারকে নিচের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
কীবোর্ডের কাজ কি?
কীবোর্ডের কাজ কি এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। কীবোর্ড আমরা মূলত ব্যবহার করে থাকি কম্পিউটারে টাইপিং করার জন্য। কীবোর্ড দ্বারা আমরা খুব সহজে যে কোনো অক্ষর, শব্দ, সংখ্যা আরো অনেক কিছু লিখতে পারি।
কীবোর্ডের সব থেকে সুবিধা হলো কীবোর্ডের মাধ্যমে অনেক কাজ শর্টকাট করতে পারি। তথ্য ও নির্দেশগুলো কীবোর্ড সরাসরি CPU তে প্রেরণ করে এবং আমরা সেটি কম্পিউটার স্ক্রীনে আউটপুট পায়। তো আপনারা কি কীবোর্ডের ব্যবহার বা কীবোর্ডের কাজ কি বিষয়টি বুঝতে পারলেন।
কিবোর্ড সম্পৃক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও তার উত্তর
কীবোর্ড আবিষ্কার করেছেন কে?
উত্তরঃ Christopher Latham Sholes.
কীবোর্ডের key কয়টি?
উত্তরঃ কোন কীবোর্ডে 84টি আবার কোন কীবোর্ডে 101-102 টি key থাকে।
কীবোর্ড কি ধরনের ডিভাইস?
উত্তরঃ ইনপুট ডিভাইস।
কীবোর্ডের দাম কত?
উত্তরঃ কীবোর্ডের দাম শুরু হয়েছে 150 টাকা থেকে। আপনারা 1500 টাকা মধ্যে ভালো কীবোর্ড পেয়ে যাবেন।
শেষ কথাঃ আশা করি আপনারা আজকের আর্টিকেল থেকে কীবোর্ড কি? কীবোর্ডের ব্যবহার? কীবোর্ড কত প্রকার ও কি কি ইত্যাদি বিষয়টি জানতে পারলেন।
কম্পিউটার কীবোর্ড সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্যই নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।