স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায় – স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ১০ উপায়
জানুনঃ স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি? স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়, স্বপ্নদোষ ভালো হওয়ার ওষুধ ও চিকিৎসা।
স্বপ্নদোষ কি?
নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হলো একজন পুরুষের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা। এটাকে ‘ভেজাস্বপ্ন’ও বলা হয়।
স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায় কি?
নাইটফল বা স্বপ্নদোষ, পুরুষদের মাঝে সাধারণ একটি সমস্যা। প্রায় সব বয়সের পুরুষদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী পুরুষরা এই সমস্যার সম্মুখীণ হয়ে থাকে।
সাধারণত ঘুমের মাঝে বীর্যের এই স্রাব শরীরের মাঝে হরমোন পরিবর্তনের জন্য হয়ে থাকে। পুরুষদের বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে, যৌন আকাঙ্ক্ষার সাথে হরমোনগত পরিবর্তনগুলি উদ্দীপনার সৃষ্টি করে এবং রাতের বেলা সেই কারণে নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হতে পারে।
তাছাড়া হরমোনাল পরিবর্তন ছাড়া অন্যান্য কারনেও স্বপ্নদোষ হয়। যেমন, পর্নোগ্রাফি দেখা, অতিরিক্ত হস্তমৈথুন, যৌন সংলগ্ন কথাবার্তা ইত্যাদি বিশেষ করে রাতের বেলায় স্বপ্নদোষ বা নাইটফলের কারণ হতে পারে।
স্বপ্নদোষ সাধারণত অক্ষতিকারক হিসেবে ধরা হয়। মানে স্বপ্নদোষ শরীরের জন্য ক্ষতির কিছু নয়। এটা সাধারণত হরমোনাল পরিবর্তনের কারনে হয়ে থাকে। এর লক্ষণ গুলোকে ভালো ভাবে চিহ্নিত করা জরুরি।
স্বপ্নদোষের লক্ষণ কি কি?
স্বপ্নদোষের লক্ষণ গুলো হলোঃ
- টেস্টিক্যালস এ যন্ত্রনা,
- গ্যাস্ট্রিক এর অসুবিধে,
- বদহজম,
- অবসাদ ও অমনোযোগী হওয়া।
এই লক্ষণ গুলোকে চিকিৎসা বিদ্যায় বিষয়ক ব্যাপার হিসেবে ধরে হয়। খুব অল্প বয়সে স্বপ্নদোষ হলে এটি অব্যবহৃত লিঙ্গ এর কারণ হিসেবে ধরা হয়। এই সমস্যাটিকে মানসিক এবং সামাজিক সমস্যা হিসেবেও ধরা হয়।
রাতের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে পুরুষেরা বিব্রতবোধ করে। তারা এই পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন ও দুঃখভোগকারী হয়ে থাকে যার জন্য ব্যাক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্ক সহ তাদের স্বাভাবিক জীবনে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
এই জন্য স্বপ্নদোষ বা নাইটফল সমস্যার সমাধানের জন্য দুই ধরনের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। একটি হলো মানসিক অন্যটি হলো শারীরিক।
স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায়
স্বপ্নদোষ বন্ধ করা বা নাইটফল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিচে কিছু সহজ উপায় দেওয়া হলোঃ
১ঃ এই স্বপ্নদোষ বা নাইটফল সাধারণত বেশি উত্তেজনা থেকে হয়ে থাকে। তাই রাতে ঘুমানো আগে সবসময় নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। গভীর শ্বাস নিন বা মেডিটেশন করুন।
২ঃ বিশেষ করে রাতের বেলায় পর্নোগ্রাফি দেখা বন্ধ করুন এবং তার বদলে ঠান্ডা ও শান্ত সংগীত শুনার চেষ্টা করুন।
৩ঃ বটল লাউ এর জুস সাধারণর স্বপ্নদোষ বা নাইটফল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এই জুস শরীরকে ঠান্ডা করে রাখতে সাহায্য করে।
৪ঃ যাদের বেশি স্বপ্নদোষ বা নাইটফল হয়ে থাকে তারা যদি দিনের বেলায় ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করে তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে। এটা গবেষণায় প্রমাণিত।
৫ঃ উদ্বেগ্ন, বিষন্নতা এবং চাপ থাকলে স্বপ্নদোষ বৃদ্ধি পেতে পারে। এই কারণ গুলো চিকিৎসাকেও অকার্জকর করে দিতে পারে। তাই সবসময় শান্ত থাকুন এবং চিন্তা করা বন্ধ করুন।
৬ঃ নিজের চিন্তা ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও এই কারণ গুলোকে স্বপ্নদোষ বা নাইটফল হিসেবে ধরা হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যোগ ব্যায়াম করুন।
৭ঃ একটা হালকা গরম স্নান ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্বপ্নদোষ বা নাইটফল এর সাথে লড়াই করার জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
৮ঃ প্রতিদিন তুলসি পাতার রস মেশানো চা স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির জন্য খুবই কার্যকর।
৯ঃ অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা পাউডার বা শিলাজিত মতো বিভিন্ন হার্বাস আয়ুর্বেদীক ঔষধ স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির প্রতিকার হিসেবে প্রমাণিত। এগুলো নিয়মিত সেবন শুধুমাত্র নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর সাথে লড়াই এর জন্য। এমনকি হারিয়ে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক শক্তিও পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
১০ঃ দৈনিন্দিন স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য, দৃঢ়ভাবে স্বপ্নদোষের সঙ্গে যুক্ত দুর্বলতা এবং অন্যান্য উপসর্গ প্রতিরোধ করার জন্য সুপারিশ করা হয়। তাছাড়া আপনি কোনো নির্দিষ্টি সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে চান তাহলে আপনি যৌন বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করতে পারেন।
স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ট্যাবলেট
মূলত স্বপ্নদোষ কোন দোষ নয়। বরং মাসে ৩-৪ বার হওয়া ভাল। তবে কারো যদি মাসে ৬-৭ বার এর বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে হামদর্দের জারনাইড সিরাপটি খেতে পারেন। এতে আপনার অতিরক্ত স্বপ্নদষ বন্ধ হতে পারে।
স্বপ্নদোষ নিয়ে শেষ কথা
স্বপ্নদোষ কোন রোগ নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি পাপও নয়। তাই আমাদের উচিত স্বপ্নদোষ নিয়ে বেশী দুশ্চিন্তা না করা। মাসে ৩ থেকে ৪ বার স্বপ্নদোষ হওয়া স্বাভাবিক বিষয়, তবে কারও যদি ৬ থেকে ৭ বার বা তারও অধিকবার স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে তার উচিত এ বিষয়ে ভাবার।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে বাচার জন্যে উপরের দেয়া ১০টি উপায় অনুসরণ করুন, এর পরেও অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ বন্ধ না হলে হামদর্দের জারনাইড সিরাপটি খেয়ে দেখুন। এই ওষুধটি স্বপ্নদোষ নিয়ন্ত্রণে বেশ সফল।