রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ! হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে?
এই আর্টিকেলে আমরা জানবোঃ হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ, রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ, রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়, হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে?
আসসালামু আলাআইকুম, অনেকেই জানতে চায় রক্তের হিমগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ সম্পর্কে, ঔষধের চাইতে খাবার বেশী কার্যকর ও ভালো। আর তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে তা জানাবো। চলুন শুরু করি।
শুরুতেই চলুন জেনে নেই কেন হিমোগ্লোবিন কমে যায়।
হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ
হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া আমাদের শরীরের একটি সাধারন সমস্যা। মানব শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাব হয়, সেই ভিটামিন ও খনিজের অভাব হলো হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ।
মানব শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার অন্যতম আরও একটি কারণ হলো লৌহের ঘাটতি। যখন শরীর সঠিক পরিমাণে পুষ্টি পায়না তখনি হিমোগ্লোবিন কমে যায়। সাধারণত গর্ভবতী নারীরা যখন শরীরের তুলনায় যখন পুষ্টি কম পায়, তখন তাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যায়।
রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়
রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন এর উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। আমাদের খাবারের রুটিনে সেসব খাবার রাখতে হবে। নিয়মিত সেসব খাবার আহার করলেই রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি পাবে।
রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ
যারা রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ খুঁজেন, মনে রাখবেন ঔষধের চাইতে খাবার বেশী কার্যকরী ও উপকারী। তাই রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ঔষধ না খুঁজে হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে তা জানুন।
হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে?
চিকিৎসক আহুজার মতে, ‘সবার লৌহের দরকার হয়। তবে নারীদের ঋতুচক্রের সময়, গর্ভাবস্থায়, শিশুদের বেড়ে ওঠার সময়, রোগ থেকে সেরে ওঠার মুহূর্তে লৌহের বেশি দরকার হয়।
যা খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়বে
লৌহযুক্ত খাবার
মানব শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো লৌহের ঘাটতি। আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন উৎপন্ন করতে এই লোহা বেশ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই আমাদের লৌহসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। লৌহসমৃদ্ধ খাবারগুলো হলোঃ মুরগির কলিজা, দিম, আপেল, বেদানা, ডালিম, তরমুজ, খেজুর, জলপাই, কিশ্মিশ ও কুমড়ার বিচি ইত্যাদি।
ফলিক অ্যাসিড
ফলিক অ্যাসিড হলো একধরনের ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। ফলিক এসিড লাল রক্তকণিকা তৈরিতে বেশ প্রয়োজনীয়। সবুজ পাতাযুক্ত সবজিতে অনেক ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। এছাড়াও কলিজা, ভাত, কলা, শিমের বিচি, বাদাম ও সবুজ ফুলকপিতেও অনেক ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি
হিমোগ্লবিন কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো ভিটামিন সি। ভিটামিন সি ছাড়া লোহা পুরোপুরি শোষণ হয়না। পেঁপে, লেবু, স্ট্রবেরি, কমলা, সবুজ ফুলকপি, আঙ্গুর, গোলমরিচ, টমেটো ইত্যাদি খাদ্যেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
বিটের রস
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য, ডাক্তাররা বিটের রস খাওয়ার পরামর্শ দেয়। বিটের রসে প্রচুর আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম ও ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। বিটের রসের পুষ্টিমান মানব শরীরে লাল রক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে।
আপেল
রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে প্রতিদিন আপেল খেতে পারেন। আপেলে আয়রনসহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। প্রতিদিন খোসাসহ আপেল খেতে পারেন, অথবা চাইলে আপেল ও বিটের রস একসাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
ডালিম
ডালিমে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আয়রন, ক্যালসিয়াম, শর্করা ও আঁশ সমৃদ্ধ একটি খাবার হলো ডালিম। ডালিম খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে। প্রতিদিন এক গ্লাস ডালিমের জিস খেতে পারেন, অথবা মাঝারি আকৃতির একটি ডালিম খেতে পারেন।
প্রাণিজ খাদ্য
দুধ, ডিম, কলিজা ও মাংসের মতো প্রাণীজ খাদ্য খেলে শরীরে খুব সহজেই হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়। প্রাণিজ খাদ্যে তৈরি হওয়া হিমোগ্লোবিন শরীরে খুব দ্রুত শোষন হয়।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছে লৌহ থাকে, যা হিমোগ্লোবিন বাড়ানোতে বেশ উপযোগী উপাদান।
শেষ কথাঃ আশা করি আজকের আর্টিকেলে হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণ, হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয় ও হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে তা জানতে পেরেছেন।
কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানিয়ে দিন, আরও স্বাস্থ বিষয়ক আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।